/home/u302395843/domains/uttorerhawa.com/public_html/header.php on line 89
" />
Wednesday 29 January 2025
2023-06-29 | দিনহাটা ,, | উত্তরের হাওয়া | Views : 117
উত্তরের হাওয়া, ২৮ জুনঃ ভোট আসে, ভোট চলেও যায়। কিন্তু সুদিনের খোজ পাননা স্থানীয়রা। প্রতিবারই ভোটের আগে নিয়ম করে আসেন সব রাজনৈতিক দলের নেতারা। প্রতিশ্রুতির ফানুশ উড়িয়ে সাদা সিধে মানুষগুলোকে স্বপ্ন দেখান উন্নয়নের। বাম-ডান নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক দলের তরফেই মেলে সেতু তৈরীর আশ্বাস। গলা চড়িয়ে পরিস্রুত পানীয় জল, পাকা রাস্তা, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের লম্বা চওড়া পরিকল্পনা শুনিয়ে যান নেতারা। কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দাদের মতো বেচে থাকা, রাজনীতির মারপ্যাচ না বোঝা সহজ সরল মানুষগুলো পুনরায় আশায় বুক বাধেন। দুরত্ব ঘুচে যাওয়ার, সহজভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখে ভোটও দেন কোচবিহার জেলার দিনহাটা ২ ব্লকের সাহেবগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুটিশাকদল এলাকার প্রায় একশ পরিবার। কিন্তু ভোট মিটতেই নেতারা বেপাত্তা হন। ফলে রাজ্য ও স্হানীয় রাজনীতিতে পরিবর্তন হলেও ভাগ্য বদল হয়না এলাকার। স্থানীয়রাও রয়ে যান সেই তিমিরেই। এমতবস্থায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কালে নিজেদের দুর্দশা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেওয়ার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন স্থানীয়রা। যদিও বিরোধী দলগুলি দোষ চাপাচ্ছে শাসকদলের ঘাড়ে। অন্যদিকে শাসকদলের তরফে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবী করা হয়েছে। কোচবিহার জেলার মহকুমা শহর দিনহাটা থেকে সাহেবগঞ্জ রোড ধরে প্রায় ১০ কিমি এগোলে গ্রামীন বাজার খাঁরুভাজ। এই বাজার সংলগ্ন খারুভাঁজ-বামনহাট পাকা রাস্তা ধরে ডানদিকে দুইশ মিটার এগোতেই চোখে পড়বে সুবিশাল নয়ার ছড়া (বিল)। এই বিলের অপর প্রান্তেই দিনহাটা ২ ব্লকের সাহেবগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুটিশাকদল। সরকারী নিয়ন্ত্রনাধীন এই বিলটির আকৃতি অনেকটা ইংরেজি অক্ষর "ইউ" এর মতো। এই বিলটিতে সারা বছরই জল থাকে। বর্ষাকালে বিশালাকার ধারন করে। অবস্থানগত দিক থেকে কুটিশাকদল এলাকার তিন দিক নয়ার ছড়া বিল দিয়ে ঘিরে রয়েছে। স্বভাবতই শুধুমাত্র একটি দিক দিয়েই স্হল পথে এলাকাটিতে যাওয়া যায়। কিন্তু সেজন্য বড়শাকদল গ্রামপঞ্চায়েতের শিমুলবাড়ি এলাকা দিয়ে প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরতে হয়। অন্যদিকে মাত্র ২০০ মিটার চওড়া বিলটি পেরোতে পারলে সহজেই দিনহাটা ২ ব্লকের সাহেবগঞ্জ, খাঁরুভাজ, বামনহাট সহ বিভিন্ন এলাকার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন স্হানীয়রা। তাই নৌকাতেই ঝুকি নিয়ে বিল পেরোন আট থেকে আশি সকলেই। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট, তার আগে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা মানুষগুলির হালহাকিকত জানার কৌতুহল নিয়েই বেরিয়েছিলাম মঙ্গলবার। নয়ার ছড়ায় ঘাটে নৌকা থাকলেও ছিলেননা কেউই। তাই খানাখন্দে ভরা বেহাল গ্রাভেল রাস্তা দিয়ে ঘুরতে হলো প্রায় ৫ কিমি পথ। সেখানে পৌছে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিতেই ঘিরে ধরে নিজেদের দুর্দশা ও সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ উগড়ে দিলেন স্হানীয়রা। এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্বাধীনতার সাত দশক পেরিয়েছে। প্রত্যন্ত এই ব্লকের সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্হার বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমুল বদল এসেছে। কিন্তু ভাগ্য বদলায়নি ব্লকের সাহেবগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত কুটিশাকদল গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দার।কারন সাহেবগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত কার্যত বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো অবস্হান করা এই এলাকায় উন্নয়নের ছিটেফোটাও পৌছায়নি । নয়ারছড়ায় স্নান করছিলেন বিশু প্রধান। তিনি আক্ষেপের সুরে জানালেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হল বিল পারাপারের সমস্যা। বিল পেরোলে সহজেই ব্লকের প্রানকেন্দ্র সাহেবগঞ্জ ও সংলগ্ন এলাকায় যাওয়া যায়। অন্যদিকে রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় যেতে অনেক হাটতে হয়। রাস্তা বেহাল হওয়ায় গাড়ি বা টোটোও আসতে চায়না। আমরা চাই বিলের উপর সেতুটা হোক। নেতারা ভোটের আগে আসে, ঘোরে। তারপর আর খোঁজ নেয় না। আরেক বাসিন্দা নীতা বর্মন বলেন, অসুখ বা কোন বিপদ হলে রক্ষা থাকেনা। রাতের বেলা নৌকার চলাচল হয়না। তাই কারো বিপদ হলে চিৎকার করতে হয়। ওপারে নৌকা থাকলে অনেক সময় রাতে সাঁতার কেটে নিয়ে আসতে হয়। আমরা চাই সেতুটা হোক। নেতারা প্রতিবার আসে। বলে সেতু হবে, রাস্তাঘাট হবে, জল হবে। কিন্তু কিছু হয়না। কিছুটা দূরে বসেছিলেন আরেক বাসিন্দা বৈদ্যনাথ বর্মন। তার কথায়, এখন জল নেই তাই মনে হচ্ছে ভালো। বর্ষায় একমাত্র রাস্তাটিও তলিয়ে যায়। জলবন্দী থাকতে হয়। তাই চিকিৎসা বা আপদকালীন পরিষেবা পাওয়া যায়না। নেতারা আসেন কিনা? জানতে চাইতেই তার ঝাজালো উত্তর, নেতাদের আমরা জানাই। নেতারা আমাদের চোখে ধুলো দেয়। সব করবো বলে, কিন্তু কিছুই করেনা। আরেক বাসিন্দা আশা বর্মন বলেন, এলাকায় শখানেক পরিবারের বাস। এলাকায় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু হাট, বাজার, গ্রামপঞ্চায়েত অফিস, বিডিও অফিস, হাইস্কুল সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ন এলাকায় পৌছাতে বিল পেরোতে হয়। নয়তো প্রায় ৫ কিমি দূরের শিমুলবাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যা যথেষ্ট সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ। চিকিৎসায় অসুবিধা ও পড়াশুনার ক্ষতি হয়। নৌকার সমস্যায় অনেকে হাইস্কুলেও যেতে পারেনা। আরেক বাসিন্দা অমূল্য বর্মন বলেন, সাহেবগঞ্জ গ্রামপঞ্চায়েতের অন্তর্গত হলেও যোগাযোগ ব্যবস্হার অপ্রতুলতায় সংশ্লিষ্ট গ্রামপঞ্চায়েতের জলকল্যানমুখী কাজকর্মের ছিঁটেফোটাও পৌছায় না এখানে। এলাকায় গ্রামপঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রনাধীন একটিমাত্র গুরুত্বপূর্ন কাঁচা রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটি সাহেবগঞ্জের নয়ার ছড়ার দক্ষিন প্রান্ত থেকে বড়শাকদল গ্রামপঞ্চায়েতের মীরেরকুঠির সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। ব্লক ও গ্রামপঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকার সাথে যাতায়াতের জন্য বাসিন্দাদের প্রায় ৫ কিমি দীর্ঘ এই কাঁচা রাস্তা ঘুরতে হয়। অথচ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি পাকা করা হয়নি। স্থানীয়দের আরও সংযোজন, এলাকায় অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্র ও পানীয় জলের সমস্যাও আছে। এমনকি নৌকা পারাপারের ঘাটটিতে সৌর বাতিটিও নষ্ট। সন্ধা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় এলাকা। পাশাপাশি নৌকা পারাপারের জন্য গুনতে হয় টাকাও।গ্রামপঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রনাধীন একমাত্র নৌকা সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলাচল করে। এরপর কোন বিপদ ঘটলে প্রবল ভোগান্তিতে
# | message |
---|