উন্নয়ন হাতিয়ার! উপনির্বাচন সিতাই বিধানসভা।
Sunday : উত্তরের হাওয়া, ১১আগস্ট: "প্লাস্টিক বর্জিত সিতাই ব্লক।
বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়ে গেছে ব্লকে।
ম্যারেজ হল থেকে ৭০ শতাংশ পাকা রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ।
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা সত্যিই স্বনির্ভর হয়েছেন ব্লকে। তাই উন্নয়নকে সামনে রেখেই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের মত বিধানসভা উপনির্বাচনেও নির্বাচনী ময়দানে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র। দাবি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঙ্গীতা বসুনিয়ার।"
সিতাই বিধানসভা, ২০১১ সালে জোট থাকার কারণে কংগ্রেসের হাতে চলে গিয়েছিল কেন্দ্রটি। তারপর ২০১৬ এবং ২০২১ দুইটি বিধানসভায় পরপর বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে এই কেন্দ্র শাসক দল তৃণমূলের হাতে। এমনকি ২০১৮ সালে লোকসভা নির্বাচনে যেখানে গোটা জেলায় ভরাডুবি হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের সেইখানে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়িয়েছিল শাসকদলের পক্ষে সিতাই বিধানসভা। ২০২৪ এ তো কথাই নেই, নবনির্বাচিত কোচবিহারের সাংসদ হিসেবে কোচবিহার পুনরুদ্ধার করেছেন সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসনিয়া। তাই প্রয়োজন হয়ে পড়েছে সেই কেন্দ্রে উপনির্বাচনের। আর এই উপর নির্বাচনের সব থেকে বড় হাতিয়ার হয়ে দাঁড়াতে চলেছে উন্নয়ন। লোকসভা নির্বাচনে নিরিখেও উন্নয়ন ছিল সবার আগে। বিশেষ করে মহিলা উন্নয়ন। একদিকে রাজ্য সরকারের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী। অন্যদিকে স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং পঞ্চায়েত সমিতির একাধিক সচেতনতামূলক প্রচার এবং জনসংযোগ এটাই মূল হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে। এমনটাই মূলত দাবী করে বলছেন পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি জগদীশ বাবুর অর্ধাঙ্গিনী সঙ্গীতা রায় বসুনিয়া। তার কথা অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে গোটা ব্লক জুড়ে। যার মধ্যে ৭০ শতাংশ পাকা রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। প্লাস্টিক মুক্ত পরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে অর্থাৎ প্লাস্টিক বর্জিত ব্লক তৈরি করার ক্ষেত্রে ৬০% এগিয়ে গেছে পঞ্চায়েত সমিতি। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে পঞ্চায়েত সমিতির সচেতনতামূলক কর্মসূচি। সঙ্গীতা দেবী রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কন্যাশ্রী এবং রুপশ্রী প্রকল্পের জন্য ব্লকে বাল্যবিবাহ যেমন একদিকে বন্ধ হয়েছে তেমনি অন্যদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে নারী শিক্ষার প্রসার। বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত সভা গুলিতে এবং জনসংযোগ মূলক কর্মসূচি গুলিতে প্রচার করা হচ্ছে কোন অবস্থাতেই ১৮ বছরের নিচে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি অভিভাবকরাও সচেতন হয়েছেন, তিনি দাবী করে বলেন অভিভাবকদের কথায়, যেখানে রাজ্য সরকার পড়াশোনার জন্য আর্থিক সাহায্যর পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সে ক্ষেত্রে কেন মেয়েদের পড়াবো না। মেয়েদের বিয়ে ১৮ বছরের পরেই হবে। মূলত একসময় এই এলাকা অর্থাৎ সিতাই সীমান্তবর্তী এলাকা ছিল বাল্যবিবাহ এবং মেয়ে পাচারের অন্যতম স্বর্গরাজ্য। যা বর্তমানে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়েছে বলে দাবি সঙ্গীতা দেবীর। একইসঙ্গে একটি ম্যারেজ হল তৈরি করা হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে কম খরচে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য। হাসপাতালের উন্নয়ন থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট, সড়ক বাতি এবং সেই সাথে জল নিকাশি ব্যবস্থার সঠিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়েছে ২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে বিগত এক বছরে। তাই এই উন্নয়নের বার্তা এবং জনসংযোগ তার উপরে ভরসা করেই আগামী দিনে উপ-নির্বাচনের বিতরণী পার হতে চলেছে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্র। শুধু তাই নয় এলাকাবাসী এবং রাজনৈতিক মহলের দাবি জগদীশ বাবুর অর্ধাঙ্গিনী সঙ্গীতা বসুনিয়া উপনির্বাচন এবং ২০২৬ মূল নির্বাচন এর ক্ষেত্রেও অন্যতম প্রার্থী পদের দাবিদার। তবে তিনি প্রকাশ্যে কোন মন্তব্য না করে বলেছেন, দল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সিদ্ধান্ত নেবেন তার সঙ্গেই থাকবে গোটা সিতাই।