ত্রিশঙ্কু জামালদহে বোর্ড গঠনে ঝাপাচ্ছে তৃণমূল-বিজেপি
2023-07-18
উত্তরের হাওয়া, কোচবিহার, ১৮ জুলাই:
২০ আসনের গ্রামপঞ্চায়েতে ম্যাজিক ফিগার ১১। কিন্তু নির্বাচনে লড়ে শাসক বিরোধী কেউই সেই জাদু সংখ্যা ছুঁতে পারেনি। তৃণমূল আটকে গিয়েছে ১০- এ। আর বিজেপি ৯-এ। বামেদের ঝুলিতে ১। অর্থাৎ বোর্ড গঠন করতে গেলে শাসকদলের দরকার আরও একটি ভোট। আর বিজেপির প্রয়োজন দুটি। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলই বোর্ড গঠন করতে মরীয়া। কিন্তু ঠিক কোন অঙ্কে তারা ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছাবেন, তা কোনও শিবিরই খোলসা করেননি।
কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফল এবার ত্রিশঙ্কু হয়েছে। ২০ আসনের এই গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘাসফুল ফুটেছে ১০টি,পদ্ম ফুটেছে ৯টি। আর বাকি আসনটি গিয়েছে সিপিআইএমের ঝুলিতে।
সোজা পাটিগণিতের হিসাব বলছে,বামেদের সমর্থন পেলেই তৃণমূলের বোর্ড গঠন নিশ্চিত। কিন্তু রাজনৈতিক সমীকরণ বলছে, রাস্তা অতটা সহজ নয়। নীতিগত কারণেই বাম-তৃণমূল আঁতাতের সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ।
অন্দরের খবর,তৃণমূল চাইছে,যেনতেন প্রকারে বামেদের সমর্থন। বাম নেতাদের অবশ্য সাফ বক্তব্য, তৃণমূলের সঙ্গে আঁতাতের কোনও প্রশ্ন নেই।
তাঁরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। দলের উঁচুতলা যা সিদ্ধান্ত নেবেন,সেটাকেই তাঁরা মান্যতা দেবেন।
অন্যদিকে,বিজেপি সূত্রে খবর, গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীদের একাংশ ভোটের ফলের দিন থেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাই তাঁদের বোর্ড গঠন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে গেরুয়া শিবিরের দাবি।
বামেদের কথা বাদ দিলে, তৃণমূল ও বিজেপি দু-দলই একে অপরকে তলে তলে ভাঙ্গানোর জন্য এখন মরীয়া হয়ে উঠেছে। কারণ, কেউ কারো সমর্থন ছাড়া জামালদহে বোর্ড গঠন করার মতো অবস্থায় নেই। এই পরিস্থিতিতে জয়ী প্রার্থীদের "পাহারা" দিতে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে দু-দলের নেতাদেরই। খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জয়ী প্রার্থীদেরও। চড়া দামে ঘোড়া কেনাবেচা রুখতে উভয় দলের নেতারাই এখন জয়ী প্রার্থীদের উপর কড়া নজর রাখছেন।
তবে,সাধারণ মানুষের মধ্যে ভোট পরবর্তী সময়ে জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েত নিয়ে "চেয়ার পে চর্চা" বেশ জমে উঠেছে। কেউ চাইছেন, এবার বিজেপি বোর্ড গঠন করুক। আবার কেউ চাইছেন,তৃণমূলের হাতেই ফের জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েত তুলে দেওয়া হোক।
তবে শেষ পর্যন্ত জামালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড কারা গঠন করবে,আর পঞ্চায়েত প্রধান কেই বা নির্বাচিত হন, সেটাই এখন দেখার।